Study LightsStudy Lights

Blog Details

শৈশবের বেহয়াপনা

সকাল ১০.৪৫ বাহিরে বৃষ্টি হচ্ছে, ক্লাস চলছে নামকরা এক উচ্চবিদ্যালয়ের ১০ম শেনীর ক্লাসে, শ্রেনী শিক্ষক জনাব আব্দুল হালিম বোর্ডের প্রশ্ন প্রনেতা নির্বাচিত হওয়াতে ক্লাসে অনুপস্থিত। তার না থাকাতে ক্লাসের ছাত্ররা মহাখুশি কিন্তু সব খুশিকে দন্ড দিয়ে ক্লাস নিতে এলেন কৃষি শিক্ষার শিক্ষক জনাব আজমত আলী স্যার, তার ছেলে এবং ভাতিজাও এই ক্লাসের ছাত্র। অন্য ব্যাচ থেকে এই ব্যাচের উপর শিক্ষকদের চাওয়াটা একটু বেশি,স্যার প্রথমে এসেই ছাত্র ছাত্রীদের হাজিরা নিয়ে পড়াতে শুরু করলেন।

স্যারের বয়সটা ৬৫+ এর মত হবে। ক্লাসের শুরু থেকেই প্রবলবর্ষনে বৃষ্টি হচ্ছিল।।

তখন ছিল আশফল নামক একটা ফলের মৌসুম। স্কুলের সামনে বিক্রিও হতো প্রচুর সবাই কিনে খেতে খেতে ক্লাস করতো প্রায়দিনই যদিও স্যার দেখলে বকতেন। এদিন স্যার না থাকায় ক্লাসের শুরু থেকেই ক্লাসে আশফল খাওয়ার হিরিক চলছিল।

স্যারের ক্লাসটাতে এমনিতেই একটু বেশিই হৈ হুল্লোড় হত (বয়স হয়েছে তো)।।।।সেদিনও তার ব্যতিক্রম নেই স্যার যদিও সেদিকে মনযোগ না দিয়ে তার মত করে পড়াচ্ছিলেন সামনের দিকটাই ভদ্র ছাত্র-ছাত্রীরাই বসতো
যেমন খসরুজ্জামান,রিয়াজ,(প্রভৃতি) আসলে অনেক আগে তো মনে নাই কে ভদ্র ছিল মাঝখানটাই তার থেকে দুষ্টুরা বসতো যেমন স্যারের ছেলে ভাতিজা রাহাত,উজ্জ্বল আমিও যদিও ভদ্র ছিলাম ওইদিন একটু……
পেছনের দিকটাই ক্লাসের দুষ্টুরা যেমন _*আকাশ,সালমান,সজীব,সুজন,নয়ন,নাজমুল,নাঈম।

ক্লাস তো চলছেই সবাইর মন তখন আশফলে।।। আর স্যারের বইয়ের পাতায়।
যারা দুষ্টু মানে পিছনের দিকটাতে যারা বসেছিল তাদের খাওয়া আশফলের আটিটা দুষ্টমি করে সামনের মোটামুটি ভদ্রদের দিকে মারতে থাকে মাঝখানটতে যা হচ্ছিল তারাও মেনে নিতে না পেরে তারাও তাদের খাওয়া আশফলের আটি পিছনের দিকে মারতে শুরু করে যেন বিশ্বযুদ্ধ চলছিল
মারতে মারতে আটির স্টক ফুরিয়ে আসলো কিন্তু যুদ্ধ তো থেমে থাকতে পারে না স্কুলের নতুন ভবন নির্মানের কাজ চলছিল ছোট ছোট ইটের টুকরার তাই অভাব হবার কথা ছিলো না হয় ও নি গ্রেনেড ছুড়তে থাকে একদল আরেক দলকে ঠিক তখনই পেছনের দিককার ছোড়া একটা গ্রেনেড লক্ষ্য ভ্রষ্ট হয়ে স্যারের গায়ে লাগলো স্যার কিছু মনে করলেন না, দ্বীতিয় বার আবার (প্রশিক্ষনপ্রাপ্ত নয় তো তাই হয়ত আবারও ভ্রষ্ট)
এবারও স্যার মেনে নিলেন কিন্তু তৃতীয়বার আবার যখন আটিটা স্যারের ঘারে লাগলো স্যার প্রথম দিকে শান্ত গলায় বলল কে কে লাগিয়য়েছে এটা কে মেরেছে এটা আশ্চর্য হলেও সত্যি কেউ জানে না; সবাই ভদ্র! দ্বিতীয় বার স্যার বললো কে লাগিয়েছে বলো; কেউ বলল স্যার ইমন[স্যারের ছেলে] স্যার তখন মিশাইলের মতো রেগে গিয়ে বললেন কার এত বড় সাহস আগে দুইবার লাগিয়েছো কিছু কই নাই কে লাগাইছে অডিন্স উত্তর দেয় স্যার ইমন আর মামুন
স্যার তখন বলল আমার ২৪ বসরের শিক্ষকতার জীবনে কোন…….. (বুঝছেনই তো)…
এ কাজ কোনদিন কেউ করে নি আজ তোরা একি কাজ করলি স্যারের মুখে ওই কথা শুনে সবাই হাসতে লাগল স্যার লজ্জায় ক্লাস রুম ত্যাগ করে অফিস কক্ষে বিষয়টি অবগত করলেন তখন সহকারী প্রধান শিক্ষক তার প্রিয় বেত খানা নিয়ে কিছুক্ষনের মধ্যেই হাজির কথায় কথায় বেত মারা যেন তার জন্মগত অভ্যান।

স্যার এসেই বলল কে করছিস আমার শিক্ষকতার জীবনে তোদের মত বেয়াদব দেখিনি বিষয়টা মনে হয় আসলেই অন্যায় হয়েছিল…। কিছুক্ষণ বাদে কম্পিউটার শিক্ষকের আগমন তিনি পুরো বিদ্যালয়ের সবচেয়ে কঠিন কড়া প্রকৃতির…এ ক্লাসে তারও ছোট ভাই এবং শালী পড়তো কিন্তু তিনি তাতে কর্ণপাত করেন না। অফিস রুম থেকে খবরটা শুনেই ক্লাসে এসে বলল কে মেরেছো স্বীকার করে নাও কিছু বলবো না; না হলে সবাইকে মারব (তার সে স্বভাব ছিল) সবাই যার যার মত করে বলল সে জানে না স্যার সিদ্ধান্ত নিল সবাইকে মারবে কিছু আম জনতা বলল তাদের জন্য আমরা কেন মাইর খাব কিন্তু সে তো নাছর বান্দা তার পরই আমজনতার বিজয় হল
আকাশ,রিয়াজ,রাহাত,সুজনও আমাকে নিয়ে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন হল সময় ১ ঘন্টা সে সময়ের মধ্য দোষীকে সামনে আনতে হবে না হলে সবাই মার খাবে (কেডি পাঠক,সিআইডি ও তো পারে না) একই সাথে তার আলমারিতে তুলে রাখা বছরে একবার বের করা বেতটাতে শান দিতে শুরু করলেন।
শুরু করলাম তদন্ত সময় শেষ হতে থাকলো কিন্তু তদন্ত কর্মকর্তারা কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারছেনন না এমন পরিপ্রেক্ষিতে সিদ্ধান্ত হলো যারা ক্লাসের বেশি দুষ্টু তারাই লাগাতে পারে….
স্যারকে তখন দেখলাম মুখটা লাল করে পাশে দাড়িয়ে আছে মনে হয় খুব কষ্ট পেয়েছিল সরি স্যার……সিধান্ত সেটাই জানিয়ে দিলাম কিন্তু আমরা জানতাম বাস্তবিক ভাবে তারা অপরাধী নয় অপরাধী ক্লাসের ফাস্ট বয়……../

Leave A Comment