মানুষের গড় ওজন হলো ষাট (৬০) কেজির আশেপাশে। ক্লাস সিক্সের বিজ্ঞান বই খুলে পাওয়া গেল, একটা ইলেকট্রন এর ওজন ৯.১∗১০−৩১৯.১∗১০−৩১ কেজি। এবার শুধু সাধারণ ক্লাস টুয়ের গণিত।
সুতরাং মানবদেহে থাকা ইলেকট্রনের সংখ্যা = ৬০৯.১∗১০−৩১৬০৯.১∗১০−৩১
=৬.৬∗১০৩১৬.৬∗১০৩১ টি।
মাত্র এতগুলি ইলেকট্রন ষাট কেজির একজন মানুষের শরীরে রাখা যেতে পারে! যদি ধরে নেই মানবদেহে শুধু ইলেকট্রন আছে তাহলে ৬০ কেজির শরীরে ৬০ কেজি ইলেকট্রন থাকবে যার সংখ্যা উপরে দিয়েছি।
এইখানে ব্যাপারটা অতি সরলীকরণ হয়ে গেছে। এবার তাই অনেকটা গভীরে যাবো। কেননা দেহ শুধুমাত্র ইলেকট্রন দিয়ে গঠিত না।
মানবদেহ প্রধানত অক্সিজেন (৬৫%), কার্বন (১৮%), হাইড্রোজেন (১০%) এবং নাইট্রোজেন (৩%) নিয়ে গঠিত। বাকী ৪% অন্যান্য মৌলসমূহ দিয়ে গঠিত। তো আমি সরলীকরণ এর খাতিরে ওই ৪% কে বাদ দিলাম! ভেরি ফানি!
প্রথমে আশা যাক অক্সিজেনের কাছে। মানব শরীরে ওজন হিসেবে ৩৯ কেজি অক্সিজেন আছে (৬০ কেজি *৬৫%)। অক্সিজেনের পারমাণবিক ভর ১৬ গ্রাম। সেই হিসেবে শরীরে ২৪৩৭ মোল (৩৯০০০/১৬) অক্সিজেন পরমাণু আছে। এক মোল পরমাণু মানে আ্যভোগাড্র সংখ্যক পরমাণু (৬.০২৩∗১০২৩৬.০২৩∗১০২৩) থাকা। এটা অনেক বড় সংখ্যা, তাই সুবিধার জন্য কিছুক্ষনের জন্য A বলে ধরবো। আর প্রত্যেকটা অক্সিজেন পরমাণুতে ৮ টা করে ইলেকট্রন থাকে।
সুতরাং, আমাদের শরীরে মোট ২৪৩৭*৮*A সংখ্যক অক্সিজেন ইলেকট্রন আছে।
একইভাবে শরীরে ১১ কিলো কার্বন, ৬ কিলো হাইড্রোজেন আর ২ কিলো নাইট্রোজেন আছে। কার্বন, হাইড্রোজেন এবং নাইট্রোজেনের পারমাণবিক ভর যথাক্রমে ১২, ১, ১৪। সেই হিসেবে ৯১৭ মোল (১১০০০/১২) কার্বন, ৬০০০ মোল (৬০০০/১) হাইড্রোজেন এবং ১৪৩ মোল (২০০০/১৪) নাইট্রোজেন আছে। কার্বন, হাইড্রোজেন ও নাইট্রোজেন পরমাণুতে যথাক্রমে ৬টি, ১টি এবং ৭টি ইলেকট্রন আছে।
মোট কার্বন ইলেকট্রন = ৯১৭*৬*A
সর্বমোট হাইড্রোজেন ইলেকট্রন = ৬০০০*১*A
মোট নাইট্রোজেন ইলেকট্রন = ১৪৩*৭*A
প্রায় শেষ হয়ে আসছে। আর একটু ধৈর্য্যের দরকার। মুড়ি শেষ হয়ে গেলে পারলে একটা লবেনজুস চুষতে থাকুন!
সুতরাং, আমাদের শরীরে থাকা মোট ইলেকট্রনের সংখ্যা = (২৪৩৭*৮*A +৯১৭*৬*A+৬০০০*১*A+১৪৩*৭*A)
= ৩১৯৯৯*A
= ৩১৯৯৯* ৬.০২৩∗১০২৩∗১০২৩
=১.৯∗১০২৮১.৯∗১০২৮
সহজ করে বললে মোট ইলেকট্রনের সংখ্যা ~২∗১০২৮২∗১০২৮ মাত্র!
তাহলে মানবদেহে থাকা মোট ইলেকট্রনের ওজন = ৯.১∗১০−৩১∗২∗১০২৮৯.১∗১০−৩১∗২∗১০২৮ কেজি
~ ১৮ গ্রাম!
অর্থাৎ, ৬০ কেজি একজন মানুষের শরীরে মাত্র ১৮ গ্রামের কাছাকাছি ইলেকট্রন থাকে! ভাবা যায়! একটা চিপসের প্যাকেটের ওজনও অনেক বেশি হয়! আসলে দেহের বেশিরভাগ ওজন প্রোটন আর নিউট্রন বহন করে। প্রোটন ও নিউট্রন ইলেকট্রনের তুলনায় যথাক্রমে ১৮৩৬ গুন এবং ১৮৩৯ গুন ভারী। সেইজন্য এত কান্ড!
সুত্রঃ ইন্টারনেট