Blog Details

  • Home
  • Blog
  • Blog
  • হেডফোনের তারে প্যাঁচ লাগে কেন…? কিভাবে মুক্তি পাবেন ?

হেডফোনের তারে প্যাঁচ লাগে কেন…? কিভাবে মুক্তি পাবেন ?

আমরা যারা গান শুনতে ভালোবাসি, তাদের জন্য হেডফোন একটি অবিচ্ছেদ্য সঙ্গী। আর হেডফোন থাকলে হেডফোনের তারে প্যাঁচ লাগা দেখাটাও আমাদের জন্য প্রতিদিনকার একটা নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। হেডফোন আছে অথচ হেডফোনের তারের প্যাঁচ খুলতে হয়নি এমন ব্যক্তি খুঁজে পাওয়া যাবে না কোথাও। আমরা কি কখনো এ সম্পর্কে ভেবে দেখেছি কেনই বা এমনটি হয়?

ব্যাগের ভেতর হেডফোন নিজে নিজেই প্যাঁচ লেগে যায়,

আমরা অনেকেই হয়তো দোষটা আমাদের নিজেদের উপরেই দিয়ে থাকি এটা ভেবে যে, হয়তো এলোমেলোভাবে পকেটে ঢুকিয়ে রাখার কারণে হেডফোনের তারে প্যাঁচটা লেগেছে। কিন্তু দেখবেন আপনি সুন্দরভাবে গোল করে পেঁচিয়ে পকেটে ঢুকালেও কিন্তু তারে প্যাঁচ লাগে। তো এমন হবার কারণ বের করতে বিজ্ঞানীরা অনেক গবেষণাও কিন্তু করেছেন। প্রথমত তারা যে পরীক্ষা চালিয়েছেন তা হলো, তারা বিভিন্ন দৈর্ঘ্যের কিছু তার একটি বাক্সে রেখে ভালভাবে ঝাঁকিয়েছেন এটা দেখতে যে তাদের মধ্যে প্যাঁচ লাগে কিনা! তারা এই পরীক্ষা একবার দু’বার করেননি, করেছেন মোট ৩,৪১৫ বার।

বিভিন্ন রকমের প্যাঁচ লাগতে পারে

ডোরিয়ান এম. রেমার এবং ডগলাস ই. স্মিথ; দুজন গবেষক তাদের ‘Spontaneous knotting of an agitated string’ নামক গবেষণা পত্রে, খুব কম সময়ের মধ্যে যেকোন জটিল গিঁট লাগার দুটি মূল বিষয়ের উপরে আলোকপাত করেছেন। প্রথমটি হলো, ‘তারের তুলনামূলক দৈর্ঘ্য’ এবং দ্বিতীয়টি, ‘আলোড়ন সময়’। আলোড়ন বলতে এখানে ঝাঁকুনির ফলে তারগুলোর মধ্যে যে নড়াচড়ার সৃষ্টি হয় তা বুঝিয়েছেন।

তাদের মতে, তার যত বড় হবে এবং সেখানে আলোড়ন যত বেশি হবে, তত তারের নিজেদের ভেতর আপনা-আপনি গিঁট লাগার সম্ভাবনাও বাড়বে। প্যাঁচ লাগার ক্ষেত্রে মাঝেমাঝে তারের গুণগত মান; যেমন তারের দৃঢ়তা এবং ব্যাসও দায়ী থাকে তবে তারের দৈর্ঘ্য এবং ঝাঁকির ফলে তাদের মাঝে সৃষ্ট আলোড়নই মূলত গিঁট লাগার পেছনে বেশি দায়ী। দুর্ভাগ্যবশত, এগুলোর খুব একটা সমাধানও নেই।

তারের দৈর্ঘ্যের সাথে গিঁট লাগার সম্ভাব্যতা;

রেমার এবং স্মিথ তাদের পরীক্ষায় বিভিন্ন দৈর্ঘ্যের তার এবং তাদের মাঝে বিভিন্ন সময়ব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি করে দেখেছেন। দেখা গেছে, ৪৬ সেন্টিমিটার এবং এর থেকে ছোট তারে আপনা আপনি গিঁট লাগেনি এবং লাগার সম্ভাবনাও একদম নেই। কিন্তু ৪৬ সেন্টিমিটার থেকে যত বেশি দৈর্ঘ্যের তার নেয়া হয়েছে তত তাদের মধ্যে গিঁট লাগার প্রবণতা বেশি দেখা গেছে। সর্বোচ্চ ২ মিটার দৈর্ঘ্য পর্যন্ত তারগুলো নিজেরাই নিজেদের মধ্যে গিঁট লাগিয়েছে। ২ মিটারের বড় তারগুলো সাধারণত বেশি দৈর্ঘ্যের কারণে পকেট জুড়ে থাকে। এজন্য ঝাঁকি পেলেও নিজেদের ভেতর আলোড়িত হবার মত জায়গা পায় না, তাই এদের মধ্যে আপনাআপনি গিঁট লাগে না।

বর্তমানে প্রচলিত হেডফোনগুলো যেগুলোর গড়ে দৈর্ঘ্য ১৩৯ সেন্টিমিটার তাদের নিজেদের ভেতরে প্যাঁচ লাগার সম্ভাবনা ৫০%। অর্থাৎ আপনার পকেটসমান জায়গা আছে এমন আবদ্ধ স্থানে এরকম দৈর্ঘ্যের হেডফোন রাখলে প্রতি দুইবারে অন্তত একবার সেই হেডফোনের তারে প্যাঁচ লাগার সম্ভাবনা থেকে যায়।

মুক্ত প্রান্ত শুধু একবার নিজের ভেতর ঢুকতে পারলেই তৈরি হয়ে যাবে শক্ত গিঁট;

রেমার এবং স্মিথ আরো দেখেছেন, Y আকারের হেডফোনগুলোয় প্যাঁচ লাগার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি থাকে। কারণ এ ধরনের হেডফোনের শুধু একটি তারের মাথা নিজের ভেতর একবার ‘ডিগবাজি’ দেয়ার মতো করে ঢুকতে পারলেই জটিল প্যাঁচের সৃষ্টি করে ফেলে। দুর্ভাগ্যবশত, বর্তমানে প্রচলিত সব তারের হেডফোনই দেখতে Y আকারের।

তারা তাদের পরীক্ষায় তারগুলোর মধ্যে প্রায় ১২০ রকমের গিঁটের দেখা পেয়েছেন, যেখানে অধিকাংশ গিঁটে তারগুলো নিজেদের মধ্যেই প্রায় ৭ বার করে প্যাঁচ লাগিয়েছে।

তাই এরপর থেকে কখনো পকেট থেকে হেডফোন বের করে যদি দেখেন সেটার তারগুলোয় প্যাঁচ লেগেছে, তাহলে অবশ্যই নিজেকে আর দোষ দেবেন না!

 

source: Roar

আরও পড়ুনঃ

ভিপিএন কী? ভিপিএন কেন ব্যবহার করবেন?

Leave A Comment